পুনশ্চ-রাশিদা কামাল


ওহাইও সংবাদ প্রকাশের সময় : জুলাই ১৮, ২০২৩, ১২:১৮ পূর্বাহ্ণ /
পুনশ্চ-রাশিদা কামাল

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
দরজায় দারোয়ান দাঁড়িয়ে। অমিয় একটু অবাক হলো। ‘এতো রাতে তুমি! কিছু বলবে ?’
‘দুপুরে চাচা আমাকে একটা খাম দিয়ে বলেছেন আপাকে দিতে। আমি ভুলে গিয়েছিলাম। একটু আগে মনে পড়লো।’

খামটা নিলো অমিয়। খামের ওপর বাবার লেখা রুমকির নামটা জ্বলজ্বল করছে।
‘ভাইয়া, কার খাম ওটা!’ পেছনে রুমকির গলা শুনে অমিয় খামটা রুমকির দিকে এগিয়ে দিলো। রুমকি নিজেও তাকিয়ে রইলো জ্বলজ্বল করা ওর নামটার দিকে। সবারই দৃষ্টি খামটার দিকে। নৈঃশব্দ্য ভাঙলো নিপা,
‘খামটা খোল রুমকি! আর পারছি না! just can’t stand the situation any more.’ বিরক্তিতে ভরা নিপার মুখ। রুমকি এ কথার উত্তর না দিয়ে অমিয়র দিকে তাকালো। ‘ভাইয়া, চিঠিটা শুধু তুই আর আমি পড়তে চাই! ‘ নিপার মুখটা আরও গম্ভীর। ‘বেশ তো! তোমারই পড়! আমি চলে যাচ্ছি!’

রুমকির মনে হচ্ছে ঘরের বাতাস বিষণ্ণ! ভোর হতে আর দেরি নেই। পুব আকাশে আলোর ছোঁয়া। পাখির মিষ্টি ডাক শোনা যাচ্ছে । সেই সাথে ডানা ঝাপটানোর শব্দ। কিন্তু পাখির ডাক, নরম গোলাপি আকাশটা
আজ রুমকির কাছে কটু আর ফ্যাকাশে লাগছে। কী লিখেছে বাবা! শুধু চলে যাবার কথা! বাবা এমনিতেই তো চলে যেতে পারতো! এতোসবের প্রয়োজন ছিলো না!

খামটা নিয়ে ওরা বারান্দায় চলে এলো। এই বারান্দায় বাবা বিকেলে বসতো। বাবা বই পড়তে পছন্দ করতো! রুমকি মনে করার চেষ্টা করলো বাবাকে কী কখনও ও বই কিনে দিয়েছে! না, দেয় নি! বরং বাবনের জন্য নানারকম বই কিনতো! বাবা সেগুলোই এখানে বসে পড়তো।

অমিয় গম্ভীর গলায় বলল, ‘চিঠিটা এখন পড়ব? ‘ ‘পড়!’ চিঠিটা খুলতেই ওদের চোখে পড়লো সম্বোধনের জাগায় ‘বুড়ি’ শব্দটা লেখা। বাবা ওকে ও নামেই ডাকতো। অমিয় শান্ত গলায় পড়তে শুরু করলো।
‘চিঠিটার সম্বোধনে বুড়ি থাকলেও আসলে আমি তোদের দুজনকেই লিখেছি। তোরা নিশ্চয়ই ভাবছিস আমি এভাবে নিরুদ্দেশ হলাম কেন! আমার অতি সাদামাটা জীবনে কেন রহস্যের সৃষ্টি করলাম! কেন যে করলাম তা নিজেও জানি না! মানুষ তো কতকিছু না জেনেও করে। আমিও হয়তো তাই করেছি!

তোরা তো জানিস আমি একটা সাধারণ চাকরি করতাম! কিন্তু আমার ইচ্ছেগুলি ছিলো অসাধারণ! তাই তোদের নিয়ে স্বপ্ন দেখতাম! মনে হতো তোরা খুব ভালো রেজাল্ট করে বড় চাকরি করছিস। দেশজুড়ে তোদের নাম! ভাবতাম ইচ্ছে থাকলে সবই হয়! এসব তো আমার ইচ্ছের কারণেই হয়েছে!

না, তোরা এসব কিছু হোস নি! তবে তোরা লেখাপড়ায় খারাপও ছিলিস না! টানাটানির সংসারে তোদের মাস্টার রেখে দিতে পারি নি। আমার কিছু প্রিয় বই ছিলো। ইচ্ছে হতো তোদেরকে কিনে দেই। তাও পারতাম না! সাধ আর সাধ্যের সমন্বয় ঘটাতে পারতাম না! তাই খুব কষ্ট হতো!

বেতনের টাকাটা তোর মার হাতে দিয়ে নিশ্চিন্ত থাকতাম। মিথ্যে বললাম! আসলে নিশ্চিন্ত থাকার ভান করতাম! কিন্তু এই ভানটা করতে আমার খুব কষ্ট হতো রে! তখন মাঝে মাঝেই মনে হতো স্বপ্নগুলি মুছে ফেলি! আমার মতো মানুষের এ ধরনের স্বপ্ন দেখা ঠিক না! এখানেও স্বপ্নগুলি গোত্তা খাওয়া ঘুড়ির মতো মুখ থুবড়ে পড়তো।
এভাবেই তোরা বড়ো হলি—–চাকরিতে ঢুকলি! অমিয় ওর পছন্দের মেয়েকে বিয়ে করলো। কিন্তু তোর বেলায় হলো এর উল্টো। তুই বিয়ে করতে চাইতিস না! শেষ পর্যন্ত আমাদের ইচ্ছেতেই তোকে বিয়ে দিলাম। তোদের বিয়েতে প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকাটা প্রায় শেষ হয়ে গেলো! এতে তোর মা বা আমার কোন দুঃখ ছিলো না! তোরা ভালো আছিস এটাই তো বড় পাওয়া! তবে সত্যি কথা কী জানিস বুড়ি, তোর মার কথা ভেবে আমার মাঝে মাঝেই খুব কষ্ট হতো। ওকে তো কিছুই দিতে পারি নি! ভাবতাম রিটায়ারমেন্টের পর তোর মাকে নিয়ে কোথাও বেড়াতে যাব। কথাগুলি তোর মাকে কখনও বলি নি । সারপ্রাইজ দেব ভেবেছিলাম। না, সেটাও দিতে পারলাম না! তার আগেই ও আমাকে সারপ্রাইজ দিয়ে গেলো!

বিয়ের এক বছরের মাথায় অমিয় তুই চলে গেলি শ্বশুরবাড়িতে। বললি নিপার এখানে কষ্ট হয়। আমরা কষ্ট পেলেও তোকে কিছু বললাম না! কারণ তুই শুনতিস না! তোকে এর পর থেকেই খুব স্বার্থপর মনে হতো! ভেবেছিলাম লোন নিয়ে একটা ফ্ল্যাট কিনব তোর নামে। আমরা দুজন মিলে লোনটা শোধ করব। ফ্ল্যাটটা তো তোরই হতো। শুধু একসাথে থাকার জন্য লোনটা নিতে চেয়েছিলাম। তুই নিপার কষ্টের কথা ভেবে চলে গেলি! একবারও আমাদের কথা ভাবলি না! এর কিছুদিন পর তুই আমার কাছে কিছু টাকা চাইলি। নিপার অফিসে যেতে অসুবিধে হয়। একটা গাড়ি দরকার। তাছাড়া ও বাড়িতে সবার গাড়ি আছে। নিপার না থাকাটা তোর সম্মানের ব্যাপার।

বাড়ি ছেড়ে যাবার পর তোকে আমার খুব অচেনা মনে হয়েছিলো! কিন্তু এবার তোকে পুরোটাই চিনলাম! আর তাই দিলাম না কোন টাকা! শেষ বয়সের শেষ সম্বলটুকু হাতছাড়া করলাম না! টাকা না পেয়ে তুই সেই যে গেলি আর এলি না! ভুল বললাম! বুড়ির বিয়েতে এসেছিলিস । আমাকে না জানিয়ে তোর মা অনেক কান্নাকাটি করেছিলো! তাই হয়তো বাধ্য হয়েছিলিস! তবে নিপা আসে নি! নিপা হয়তো ভাবতো আমরা ওর উপযুক্ত না!

আমাদের সাথে ও কখনও ভালো ব্যবহারও করতো না। তোর মা অনেক সময় ওকে বুকে টেনে আদর করতো। ও কিন্তু তাতে বিরক্ত হতো। কাছে না এসে শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতো। ওর কথাতেও খোঁচা থাকতো। খোঁচাটা আমার দারিদ্র্য নিয়ে। তবে তোর মা তোর চলে যাওয়াটা মানতে পারতো না! তোদের আসতে বলতো। আসতিস না। তুই টাকা না পাওয়ার কথাটা ভুলতে পারতিস না! অথবা ভুলতে চাইতিস না!

হয়তো সে কারণেই তোর মা অসুস্থ হয়ে পড়লো। জোর করে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলাম। ডাক্তার বললেন প্রেসার হাই। চিন্তা করতে বারণ করলেন। কোথাও বেড়াতে নিয়ে যাবার কথাও বললেন। আমাকে না বললেও বুঝলাম তোর মা আমাদের নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। দেশের বাড়িতে আমাদের একটা ঘর আছে। মনে হলো ওই বাড়িটা মেরামত করে আমরা তো থাকতে পারি! ওর অন্তত একটা ইচ্ছে পূরণ হবে! কথাটা তোর মাকে বললাম। খুব খুশি হলো! একদিন নিয়ে গেলাম গ্রামে। ওইদিন দেখলাম তোর মা সুন্দর করে শাড়ি পরেছে। যত্ন করে খোঁপা বেঁধেছে। কাজল পরেছিলো কি না মনে নেই! তবে ও কাজল পরতে পছন্দ করতো। অনেকদিন পর মনে হলো আকাশটা কী সুন্দর——গাঢ় নীল!
আমি বাড়িটা দেখছিলাম না, দেখছিলাম তোর মাকে! ও একটু যেন কাঁপছিলো! আমি ওর হাতে হাত রাখলাম। বললাম, ‘ কাঁপছ কেন!’

তোর মা এ কথার উত্তর না দিয়ে শুধু একটু হাসলো। অমিয়, অনেকদিন পর তোর মার চোখে উজ্বলতা দেখলাম! খসে পড়া পলেস্তরার মাঝে তোর মা কী দেখেছিলো তা আমার কাছে আজও অস্পষ্ট! বাসায় ফেরার পথে তোর মাকে নিয়ে একটা রেস্টুরেন্টে ঢুকলাম। কোন দিন তো এভাবে কোথাও যাই নি! খেতে খেতে তোর মা বলল, আমি কিন্তু গাছগাছালি দিয়ে বাড়িটাকে সাজাবো! তখন দেখবে খোকন আর নিপা ঠিকই আসবে! শেষের কথাটায় ওর চোখে পানি চলে এলো। আমি সামলে নেবার জন্য বললাম,
‘আগে খাও। তারপর এসব কথা হবে।’

পরের সপ্তাহে বাড়ির কাজে হাত দেব ভেবেছিলাম। কিন্তু দিতে পারি নি। এর মধ্যে তুই একদিন বাসায় এলি। এ কথা সে কথার পর বললি, ‘বাবা, আমাদের দেশের বাড়িতে তোমার একটা ঘর আছে না!’ আমি ভাবলাম তুই বুঝি ঘরটা মেরামতের কথা বলবি। আমি খুব খুশি হলাম। ‘শুধু ঘর বলছিস কেন ? অনেকটা জায়গাও আছে আমার ভাগে! ‘ ‘খুব ভালো বাবা! আমি ভাবছি তোকে কথা শেষ করতে না দিয়ে বোকার মতো বললাম, ‘কী ভাবছিস মা ?’ ‘ওটা বিক্রির কথা ভাবছি। আজকাল গ্রামেও জমির অনেক দাম! আমি একটা ফ্ল্যাট দেখেছি। বুকিং মানি দরকার। ওটা বিক্রি করলে টাকাটা দিতে পারি।’ আমি অবাক হয়ে শুনলাম। শেষে বললাম, ‘আমরা কোথায় যাব তাহলে!’ ‘তোমরা গ্রামে থাকার কথা ভাবছ না কি!’ ‘ভাবতে তো হবেই!’ ‘শোন বাবা, আমি যে ফ্ল্যাটটার কথা ভাবছি সেটা বেশ বড়। তোমরা যদি ভাড়া বাসায় থাকতে না চাও তবে আমার একটা রুমেই না হয় থেকো! ‘

আমি তোর কথার উত্তর দিতে পারলাম না! বুড়ি, তোরা এ প্রজন্মের মানুষ বলেই কি এতো প্র্যাকটিক্যাল! আমাদের প্রজন্মে তো আমরা বাবামাকেও সমান মর্যাদা দিতাম! এটা কি প্রজন্মের দোষ না কি তোদের মতো স্বার্থপর মানুষের দোষ!

অমিয় টাকা না পেয়ে আমাদের ছেড়ে চলেই গেলো—–মুছে ফেলতে চাইলো নিজের শেকড়কে। তুই কিন্তু তা করলি না! মিথ্যে কথার আশ্বাস দিয়ে লেগেই থাকলি! তবে তোর ছেলেভুলানো কথায় কাজ হলো না! তোদের কারণেই হয়তো আমিও পৌঁছে গেলাম তোদের প্রজন্মে!

তোর মনে আছে বুড়ি, তুই কী সুন্দর করে পুতুল খেলতিস ! মিথ্যে মিথ্যে ঘর বানাতিস! একবার তুই একটা গোলাপি পুতুলের বায়না করলি। আমি কিনতে গিয়ে দেখলাম পুতুলটার অনেক দাম। অনেকদিন পর বোনাস পেয়ে আগে ওই পুতুলটা কিনলাম। তোকে ওটা দিতে গিয়ে আমার চোখে পানি চলে এসেছিলো। কেন জানিস! তোর অন্তত একটা আবদার মেটাতে পেরেছি!

যাকগে এসব কথা! বাড়ির কাজে হাত দিলাম। তোর মা ফলফুলের গাছ দিয়ে সত্যিই বাড়িটা ভরিয়ে তুলল। দুটো বুড়ো নারকেল গাছ ছিলো। ফল দিতো না! তবে হলুদ ফুলে ভরে থাকতো তলাটা। তোর মা গাছদুটোর তলায় বসতো আর ফুলগুলি হাতে নিতো। এ দৃশ্য আমার খুব ভালো লাগতো।

একদিন তোর মা বলল ওর শরীরটা ভালো লাগছে না। ওকে বললাম বিকেলে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাব।
বিকেলটা আর এলো কই! তার আগেই তো আমার জীবনে রাত নেমে এলো! আমার কোলে মাথা রেখে তোর মা চোখ বন্ধ করলো। এ ঘুম যে আর ভাঙবে না তা তখন বুঝতে পারি নি! বুড়ি আমার প্রায়ই মনে হয় তোর মা কি কিছু বলতে চেয়েছিলো! আমি এ কারণেই বারান্দায় বসে আকাশের দিকে তাকিয়ে বলতাম কী বলতে চেয়েছিলে! দোলনচাঁপা হাসনুহেনায় ভরে গেছে বাড়িটা! বুড়ো নারকেল গাছদুটো এখনও ফুল ছড়ায়! তুমি কি এসব দেখতে পাও!

বুড়ি, অনেক কথা লিখলাম। কিন্তু চলে যাবার কথা তো লিখলাম না! আগেই তো বলেছি এর উত্তর আমার স্পষ্ট জানা নেই! হয়তো তোর বেঁধে দেওয়া রুটিনটা ভালো লাগছিলো না আমার! সংসারজীবনে এই একটা কাল হয়তো আমি আমার মতো করে কাটাতে চাইছি! মনের মধ্যে জমে থাকা কালো জমাট মেঘ ঝরাতে চাইছি! এক সময় স্বপ্ন দেখতাম তোদের নিয়ে—–বুকের মধ্যে তখন হাজার পাখির ভিড় ছিলো! মনের মধ্যে পাথুরে নদীটা শুকিয়ে গেছে! পাখিরা কেন থাকবে আর বল!

কোথায় গেলাম তা জানতে চাস না! তবে তোদের বেঁধে দেওয়া গতানুগতিক জীবন থেকে মুক্তি পেয়েছি। বিশাল আকাশ মাথার ওপর। সবুজ প্রান্তর পায়ের কাছে। সে প্রান্তরে আছে শান্ত ধানখেত, বুনোফুলের ঝোপ!
তোর মা চলে যাবার পর ভেবেছিলাম গ্রামের বাড়িতে চলে যাই। কিন্তু যে বাড়িটা তোর মা সাজিয়েছে তাকে ছাড়া যাই কী করে বল! তাই বাধ্য হয়ে তোর কাছেই গেলাম। তুই আমার কথা ভেবে আমাকে নিস নি! তোর প্রাত্যহিক সুবিধার কথা ভেবেই নিয়েছিলিস। কী করব বল! আমার যে আর বাঁধন ভালো লাগলো না!

নসুই বেরিয়ে পড়ার ব্যবস্থা করেছে। এখন তোর মার সাথে অনেক কথা বলতে পারি!
বুড়ি, আসল কথাটা এখনও বলা হয় নি! আমি জানি তোদের দুজনারই ওই গ্রামের বাড়িটার দিকে নজর আছে! একটা অনুরোধ বাড়িটা বিক্রি করিস না! তোর মার আর আমার স্মৃতি উপড়ে ফেলিস না!
স্মৃতিরাও তো কথা বলে—–গন্ধ ছড়ায়! ওখানে তোদের মার গন্ধ পাবি!

আমি শূন্য থেকে উঠে আসা একজন মানুষ! কী আছে আমার! কে আছে আমার! কে আটকে রাখবে আমাকে! যদিও আমি ভাবতাম আমি তোদের মাথার ছায়া—–তোদের ইচ্ছের ছায়া! কথাটা ভুল ভাবতাম। সবাই তোরা নিজেদের মতো ব্যস্ত! সেখানে আমার স্থান কোথায়! তোরা ভালো থাকিস! ইতি—–বাবা (পুনশ্চ:বুড়ি, পারিবারিক বাঁধনের একটা সূক্ষ্ম সৌন্দর্য আছে। সবাই সেটা বোঝে না! অনুভবও করে না! এই বাঁধনটাই সম্পর্কের স্তম্ভ। একে দুর্বল হতে দিস না। তাহলে তোদের অবস্থাও এক সময় আমার মতোই হবে।)