সিলভীয়া পান্ডীত – ওহাইও
আমি রেলগাড়ি চড়িয়া শান্তিনিকেতনের উদ্দেশ্যে রওনা হইয়াছিলাম, দার্জিলিং গিয়াছিলাম লিখিবার জন্য। কেন যেন এইবার দার্জিলিংয়ে যাইয়া কিছুতেই আমি লিখিতে পারিতেছিলাম না। সে কারণে আমার মন ভীষণ রকমের খারাপ হইয়া গিয়াছিল। লিখিতে না পারা একজন লেখকের জন্য যে কতটা কষ্টের এইবার আমি দার্জিলিংয়ে যাইয়া হাড়ে হাড়ে টের পাইয়াছিলাম।
রেলগাড়ির ফার্ষ্টক্লাশ কম্পার্টমেন্টে বসিয়া আমি যখন রেলগাড়ি ছাডিবার জন্য অপেক্ষা করিতেছিলাম ঠিক সেই মুহূর্তে একটি বিশ হইতে বাইশ বছরের মেয়ে রেলগাড়িতে আমার উল্টোদিকের বসিবার জায়গায় আসিয়া বসিয়াছিল। মেয়েটিকে দেখিয়াই আমি বুঝিয়াছিলাম মেয়েটি সদ্য বিধবা কারণ তাঁর চুল ছোট করিয়া অগোছালো ভাবে কাটা, শরীরে ছিল চিকন সোনালি পাড়ের সাদা শাড়ি। ব্লাউজহীন মেয়েটি কিন্তু খুব সজতনে তাঁহার শরীর ঢাকিয়া রাখিয়াছিল কালো রঙের একটি কাশ্মিরী শাল জড়াইয়া। কেন যেন আমি মেয়েটির দিকে মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকাইয়াছিলাম, আর মনে মনে ভাবিতেছিলাম, আহা অল্প বয়সের বিধবা মেয়েটি! মেয়েটির মনে না জানি কত কষ্ট!
আমাকে অবাক করিয়া মেয়েটি হাতে ধরা আধ খাওয়া আপেল চিবাইতে চিবাইতে সাবলিল ভাবে জিজ্ঞাসা করিয়াছিল, “আপনি কী রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর? “ আমি মুচকি হাসিয়া মাথা নাড়িয়া যেই সম্মতি জানাইয়াছিলাম ঠিক পর মুহূর্তেই মেয়েটি উপুর হইয়া আমার পায়ে মাথা ঠেকাইয়া প্রণাম করিয়া বলিয়াছিল, “ আমি আপনাকে মনে মনে অনেক খুঁজিতেছিলাম, যদিও ঈশ্বরে আমি বিশ্বাস করিনা তথাপি আমি মনে মনে কোন এক না দেখা শক্তির কাছে প্রার্থনা করিতেছিলাম যেন আমি বাঁচিয়া থাকিতে একবারের জন্য হইলেও ঈশ্বর যেন আপনার সাথে আমার দেখা করাইয়া দেন।
আমি অবাক হইয়া মেয়েটিকে জিজ্ঞাসা করিয়াছিলাম, “কেন তুমি আমার সাথে দেখা করিতে চাহিয়াছিলে?” উত্তরে মেয়েটি আমাকে অবাক করিয়া জানিতে চাহিয়াছিল, “আপনি মৈত্রি দেবীকে কেন এত ভালবাসেন?সে আপনাকে নিমন্ত্রণ করিলেই আপনি কেন তাঁর বাড়িতে বেড়াইতে যান?”
আমি উত্তরে কী বলিবো বুঝিতে পারিতেছিলাম না। সত্যি মৈত্রিকে আমি অনেক স্নেহ করি। ও খুব ভাল মেয়ে, তাহা ছাড়া মৈত্রি যে পরিবারে জন্ম গ্রহন করিয়াছে সে পরিবার শিক্ষিত এবং নানা ধরণের সংস্কৃতি চর্চার সাথে জড়িত। সে কারণেই মৈত্রির বাবার সাথে আমার খুবই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। শিশুকাল হইতে মৈত্রিকে ওর গুণী বাবা তাঁর মতই গুণী করিবে বলিয়া নিজেই মৈত্রিকে নানা বিষয়ে জ্ঞান দান করিতেন। মৈত্রির মাঝে আমি অন্যরকম আলোর সন্ধান পাইয়াছিলাম বলিয়া ধীরে ধীরে ওর প্রতি আমার এক ধরণের অন্ধ অনুরাগ জন্মাইয়াছিল, আর সে কারণেই মৈত্রির প্রতি আমার কিছুটা অন্ধ প্রশ্রয়ও ছিল। এটা একধরণের গুণীর প্রতি অনুরাগ বলা যাইতে পারে।
আমি সাদা শাড়ি পড়া বিধবা মেয়েটিকে কোন উত্তর না দিয়া ওঁকে পর্যবেক্ষন করিতে থাকিলাম। মেয়েটি বিদেশীদের মত ফর্সা না আবার গায়ের রং আমাদের দেশী মেয়েদের মত চাঁপাও না। নাক, চোখ এবং ঠোঁট কোন কিছুই মেয়েটির অতি সুন্দর না, তবে হাসিটা তাঁহার প্রাণবন্ত। চুল ছোট এবং অগোছালো বলিয়া মেয়েটির অন্যরকমের সৌন্দর্য আমার চোখে ধরা পড়িয়াছিল। মনে মনে আমি ভাবিতেছিলাম, যাঁরা মেয়েটি বিধবা বলিয়া চুল কাটিয়া দিয়াছে ওকে শ্রীহীন করিবার জন্য তাঁহারা জানেনা তাঁহারা মোটেও কৃতকার্য হয়নি বরং উল্টো হইয়াছে। আমার চোখে মেয়েটিকে অপূর্ব সুন্দর লাগিতেছিল। আমি মেয়েটিকে গলার স্বর নীচু করিয়া জিজ্ঞাসা করিয়াছিলাম, “তোমার নাম কী ? তুমি কোথায় থাকো? কোথায় যাইতেছো? তোমার সাথে কেউ নেই কেন? ”
মেয়েটি আমাকে অবাক করিয়া তাঁহার নাম বলিল, “সিলভীয়া।” আমি তখন সিলভীয়াকে কৌতুহল বশত প্রশ্ন করিলাম, “বাঙালি মেয়ের ইউরোপিয়ান নাম কেন?”
আমার প্রশ্ন শুনিয়া সেই বিধবা সিলভীয়া খিলখিল করিয়া হাসিয়া বলিল, “আমার মা আমার জন্মের অনেক আগেই আমার নাম ধার্য করিয়া রাখিয়াছিল। মা খুব গল্পের বই পড়েন, মার পড়া কোন একটা গল্পে সিলভীয়া নামের একটি চরিত্র ছিল, সেই সিলভীয়া চরিত্রের মেয়েটির চরিত্র এবং নাম আমার মার খুব ভাল লাগিয়াছিল বলিয়াই মা তাঁর এই বিধবা মেয়ের নাম সিলভীয়া রাখিয়াছিল। বড় হইবার পর যখন আমার নাম রাখার কারণ জানিয়াছিলাম তখন সেই গল্পের বইটি পড়িবার জন্য আমি ভীষণ আগ্রহী হইয়া বইটি পড়িবার জন্য অনেক খুঁজিয়াছিলাম তবে বইটি আমার আর পড়া হইয়া উঠে নাই কারণ বইটি আমি খুঁজিয়া পাই নাই। মা যত্ন করিয়া কোথায় যেন বইটি রাখিয়াছিলেন, তাই সেই অতি যত্নের বইটি তিনি হারাইয়া ফেলিয়াছিলেন!
রেলগাড়ি যখন চলিতে শুরু করিয়াছিল সিলভীয়া তখন হঠাৎ চুপ হইয়া গেল। আমি তখন কথা না বাড়াইয়া একটা বই হাতে লইয়া পড়িতে শুরু করিয়াছিলাম, সিলভীয়া তখন তাঁহার হাতে ধরা অর্ধেক আপেল খাইতে শুরু করিয়াছিল। আপেল শেষ করিয়া সিলভীয়া আমাকে ডাকিয়া কহিল, “ আপনি কত নারী চরিত্র নিয়ে গল্প লেখেন আমাকে নিয়ে একটি গল্প লিখিবেন?” আমি হাসিয়া সিলভীয়াকে বলিলাম, “তোমার জীবনে এমন কোন ঘটনা কী ঘটিয়াছে যাহা গল্প হইতে পারে? “
আমার কথা শুনিয়া সিলভীয়া বলিল, “আমার জীবনের গল্প শুরু হইয়াছে আমার বিয়ের রাত্রি থেকে। আমার স্বামী খুব ভাল মানুষ তাই আমাকে বিয়ের রাতেই বলিয়াছিল তাঁহার অন্য একজন বিবাহিতা নারীর সাথে সম্পর্ক আছে, সেই নারীকে সে খুব ভালবাসে। আর সেই কারণেই আমাকে সে কোনদিন স্ত্রীর মর্যাদা দিবেনা। আমি আমার স্বামীর সততা দেখিয়া তাঁহার এই সিদ্ধান্তকে সম্মান করিয়াছিলাম। সে তো চাহিলে আমার সাথে সম্পর্ক করিয়া তাঁহার প্রেমিকার সাথেও সম্পর্ক রাখিতে পারিত। সে তাহা করে নাই, আমার স্বামী তাঁহার প্রেমিকার সাথে স্বচ্ছ এবং আমার সাথেও স্বচ্ছ ছিল বলিয়া আমার স্বামী মারা যাইবার পর আমার কষ্ট হইয়াছিল। তবে আমার স্বামীর সাথে আমার যে কোন সম্পর্ক ছিল না তাহা কাউকে বলি নাই। গোপন করিয়াছিলাম নিজেকে লজ্জার হাত হইতে বাঁচাইতে। আমার মত মেয়ের স্বামী অন্য নারীর জন্য আমাকে অবহেলা করিবে ইহা কি লজ্জার বিষয় না? তাহা ছাড়া আমার বাবা এবং মা জানিলে কষ্ট পাইবেন সে কথা ভাবিয়া আমি চুপ করিয়া স্বামীর গোপন প্রেম যাহা আমার শ্বশুর শাশুরী অবগত ছিলেন তাহা আমার পরিবারের কাছে গোপন করিয়াছিলাম।
আমার শ্বশুর এবং শাশুরি ভাবিয়াছিল ছেলেকে যদি সুন্দরী মেয়ে দেখিয়া বিবাহ দেয় তবে তাঁহাদের ছেলে তাঁর বিবাহীতা প্রেমিকাকে ভুলিয়া যাইবে। তবে তাঁহাদের এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল প্রমান করিয়া আমার স্বামী দেবতা আমার দিকে ফিরিয়া না চাহিয়া তাঁহার প্রেমিকার প্রতিই মুগ্ধ ছিল এবং তাঁহার প্রতি সৎ ছিল। আমার বিয়ে হইয়াছে দুই বছর, স্বামীর সাথে আমার কোন ভালবাসার সম্পর্ক হয়তো ছিল না তবে ঘৃণা করিবার মতও কোন সম্পর্কও প্রতিষ্ঠা হয় নাই। আর সে কারণেই সে মরিয়া যাইবার পর আমার মনে হইয়াছিল জগত হইতে একটা ভাল মানুষ চলিয়া গেল। আমার স্বামী আমাকে বলিয়াছিল সে আমাকে মুক্তি দিবে যদি আমি মুক্তি চাই। আচ্ছা বিশ্ব কবি আপনি বলুন তো আমাদের সমাজে মেয়েদের কি কোন স্বাধীনতা আছে? আমি মুক্তি লইয়া কোথায় যাইবো? বাবার বাড়িতে গেলেও পরাধীন হইয়া থাকিতে হইবে,শ্বশুর বাড়িতে তো বউরা চিরকাল পরাধীন! আমাদের কবে মুক্তি হইবে বলিতে পারেন?
সিলভীয়ার কথা শুনিয়া আমার বুকের ভেতর কষ্ট হইতে থাকিল। আমি চুপ করিয়া রহিলাম, চোখের কোনে কি আমার জল আসিতেছিল? মনে হয় আসিয়াছিল। আমি আমার শাল দিয়া কোন মতে সিলভীয়ার দৃষ্টিকে ফাঁকি দিয়া সেই জল মুছিয়া ফেলিয়াছিলাম। খাবার সময় যখন হইয়া গেল তখন আমার ভৃত্য খাবার লইয়া আসিল। আমি খুবই ইতস্তত করিতে লাগিলাম এই ভাবিয়া, কি ভাবে আমি সিলভীয়ার সম্মুখে আমিষ খাবার খাইবো। যদিও আমি আমাদের এই সব নিয়ম একদম পছন্দ করিনা।
আমার ভৃত্য যখন আমার খাবার পরিবেশন করিতেছিল তখন সিলভীয়া আমাকে জিজ্ঞাসা করিয়াছিল “আপনি কি আপনার খাবার হইতে আমাকে কিছু খাইতে দিবেন? আমি আজ বেশ কয়েকদিন ভাল খাবার খাইতে পারিনাই। আমার শ্বশুর বাড়ির লোকেরা আমার স্বামী মরিয়া যাইবার পর আমাকে জোর করিয়া চুল কাটিয়ে দিল, তারপর আমাকে সাদা কাপড় পরিতে বাধ্য করিল, আমার শরীর হইতে সব গয়না খুলিয়া ফেলিল আমি সব মুখ বুজিয়া সহ্য করিবার চেষ্টা করিতেছিলাম কিন্তু যখন আমাকে নিরামিষ খাইবার জন্য বাধ্য করিয়াছিল তখন আমি আর মানিতে পারিলাম না এই কথা মনে করিয়া, যে লোকটা একদিনের জন্য আমাকে ভালবাসে নাই সে লোকটা মরিয়া যাইবার পর আমাকে কেন এত ত্যাগ স্বীকার করিতে হইবে বলিতে পারেন ?”
সিলভীয়া না থামিয়া এত কথা একসঙ্গে বলিয়া একটু চুপ করিয়া আবার বলিতে শুরু করিল “আচ্ছা বলেন তো আমি মরিয়া গেলে আমার স্বামী কি তাঁর চুল কাটিয়ে ফেলিত? সে কি আমার সঙ্গে চিতায় উঠিত ? যদিও আমাকে আমার শ্বশুরবাড়ি চিতায় উঠিতে বলে নাই ! তবে চিতায় উঠা মনে হয় এই ভাবে বাঁচিয়া থাকার চেয়ে অনেক শ্রেয়! চিতায় উঠিলে একবারে সব শেষ আর না উঠিলে বাকি জীবন ধুকিয়া ধুকিয়া পুড়িয়া মরিতে হইবে। আমার স্বামী কি আমি মরিয়া যাইবার পর পুরুষ বিধবা হইয়া কোনদিন বিবাহ না করিয়া থাকিত? সে হয়তো বিবাহ করিত না কারণ তাঁহার একটি লুকানো প্রেমিকা ছিল তবে সে তো আমি নাই বলিয়া বাকি জীবন নিরামিষ খাইয়া কাটাইয়া দিতো না!”
আমি চুপ করিয়া রহিলাম, সিলভীয়াকে স্বান্তনা জানাইবার কোন ভাষা আমার জানা নাই, ওর প্রশ্ন গুলোতো আমারো প্রশ্ন! আমার প্রচন্ড ক্ষিদা পাইয়াছিল তাই আমি আমার ভৃত্যকে সিলভীয়ার জন্যও আরেকটি খাবার প্লেট আনিতে বলিলাম। আজ আমি মন ভরিয়া সমাজকে ফাঁকি দিয়া একটি বিধবা মেয়ের সাথে আমি বিধবা পুরুষ আমিষ দিয়া আহার করিবো ভাবিয়া মনে মনে ভীষণ পুলকিত অনুভব করিতেছিলাম।
আহার করিতে করিতে সিলভীয়া আমাকে বলিলো, ও ওর বাবা মার কাছে ফিরিয়া যাইয়া একটি স্কুল চালু করিবে সেখানে সে সমাজের সুবিধা বন্চিত নারীদের শিক্ষা দিবে। সিলভীয়া সেই সকল সুবিধা বন্চিত নারীদের মধ্যে আত্মসম্মানবোধ জাগাইয়া প্রতিবাদী হইবার জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুত হইবার শিক্ষা দিবে। আমি অপলক চোখে এই সদ্য বিধবা মেয়েটির দিকে চাহিয়া থাকিলাম আর মনে মনে বলিলাম, সিলভীয়া আমার পক্ষে যদি সম্ভব হইতো আমি তোমার সাথে সবার সম্মুখে বসিয়া আমিষ দিয়া ভাত খাইতাম! তবে আমি বড় অসহায়, আমি নিজ কন্যার জন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হইবার পরও শক্ত ভাবে কিছু করিতে পারিনাই, মেয়ের পাশে দাঁড়াইয়া কহিতে পারিনাই “আমার কাছে চলিয়া আসো, আমি তো আছি তোমাকে আশ্রয় দিবার জন্য। এ কষ্ট আমি কোনদিন কারো সাথে কহিতে পারিনাই। তুমি প্রতিবাদ করো, অসহায় কন্যাদের পাশে দাঁড়াও , বিধবা নারীদের সাথে লইয়া আমিষ দিয়া ভাত খাও , সাদা শাড়ি খুলিয়া রঙিন শাড়ি শরীরে জড়াইয়া নিজেকে নিজের জন্য সাঁজাও, পায়ে আলতা পড়িয়া এবং চুল লম্বা করিয়া সে চুলে ফুল গুঁজিয়া নিজেকে সাজাইয়া নিজেই নিজেকে মুগ্ধ হইয়া দেখো। পুরুষ মানুষের জন্য কেন তোমাদের সাঁজিতে হইবে বা জীবনের সব শখ ত্যাগ করিতে হইবে?”
হঠাৎ করিয়া আমাদের ট্রেণ একটি স্টেশনে আসিয়া থামিয়া গেল। সিলভীয়া কহিলো, “আমার বিদায় লইতে হইবে, তবে যাইবার আগে আমি আপনাকে বলিতে চাই, আমি “ন হন্যতে” বইটার লেখিকা মৈত্রি দেবীকে খুবই হিংসা করি, পরজন্মে আমি মৈত্রি দেবীর মত জীবন চাই। মির্চার মত প্রেমিক চাই আর আপনার মত একজন বিখ্যাত মানুষের সংস্পর্শে বাড়িয়া উঠিতে চাই, যে মানুষটি সকল বিষয়ে আমার একমাত্র অনুপ্রেরণার কারণ হইবে। আমি আমার বাড়িতে নিমত্রণ করিলে নিমন্ত্রণ রক্ষা করিতে আমার বাড়িতে আসিবে!” সিলভীয়ার কথা শুনিয়া আমি ওঁকে জিজ্ঞাসা করিলাম “ন হন্যতে” বইটা মৈত্রি কবে লিখিলো? আমি তো এই বিষয়ে কিছুই জানিনা!”
ডেলটা এয়ারলাইন্সের এয়ার হোষ্টেস আলতো ভাবে আমার কপালে হাত রেখে ঘুম ভাঙিয়ে আমাকে ডেকে বললো, “We have landed in Columbus.” আমি মুচকি হেসে এয়ার হোষ্টেসকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্লেন থেকে নামতে নামতে মনে মনে হাসছিলাম রবিঠাকুরের সাথে স্বপ্নে আমার ট্রেণ ভ্রমনের কথা মনে করে। তারপর খুব জোরে একা একাই হেসে উঠিছিলাম রবি ঠাকুর মৈত্রি দেবীর লেখা “ন হন্যতে” বইটা সম্পর্কে কিছু জানেন না মনে করে! “ন হন্যতে” বইটা তো মৈত্রি দেবী লিখেছিলেন সত্তরের দশকে আর রবিঠাকুর পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছিলেন চল্লিশের দশকে!
যাই হোক, আমি যে নিউ ইয়র্কে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন পালন উপলক্ষে আয়োজিত রবীন্দ্র ফেষ্টিভ্যালে অংশ নিয়ে পুরোপুরি সম্মোহিত লাগোরডিয়া টু কলোম্বাসের আমার দেড় ঘন্টার জার্নির স্বপ্ন তার প্রমান!
আপনার মতামত লিখুন :