কলম্বাসের বাঙ্গালীরা মহা সমারোহে মিলিত হলেন “বিজয়া সম্মিলনী” তে


ওহাইও সংবাদ প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ১২, ২০২২, ১০:৪৮ অপরাহ্ণ /
কলম্বাসের বাঙ্গালীরা মহা সমারোহে মিলিত হলেন “বিজয়া সম্মিলনী” তে

অরুন্ধতী সরকার, ওহাইও সংবাদ : গত ১২ই নভেম্বর ২০২২ এ Ted Kaltenbach Park and Community Center,  ডাবলিনে আয়োজিত হয়েছিল বিজয়া সম্মিলনী ২০২২। আয়োজক কমিটির মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন শ্রী বিজিত ভাদুড়ি, শ্রী দীপায়ন ভৌমিক ও শ্রী সোমনাথ গান্ধী। শ্রী ভাদুড়ির কাছে জানা গেল ২০১৮ এ সুদীপ্ত রায় ও সোমনাথ বাবুর সঙ্গে তাঁরা প্রথম কলাম্বাসের বৃহত্তর বাঙ্গালী জনগোষ্ঠীকে একত্রিত করার উদ্দ্যেশে এই উদ্যোগ নেন। ২০১৯ এ সুদীপ্ত বাবু ও সোমনাথ বাবুর সাথে শ্রী অমিত রাহা দায়িত্ব ভাগ করে নেন। এরপর ২০২০ তে কোভিডের জন্য সব বন্ধ ছিল। ২০২১ সালে প্রয়াস কলাম্বাসের চেষ্টায় আবার এই উৎসব শুরু করা হয়। এ বছর তাই সেই ধারাকেই বজায় রাখার এক গুরু দায়িত্ব ছিল আয়োজক কমিটির উপর।

সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা চারদিনব্যাপী দুর্গোৎসবের শেষে বিজয়া দশমী উপলক্ষে গুরুজনদের প্রণাম জানান ও ছোটদের স্নেহাশিষ দিয়ে উৎসবের ইতি টানেন। বাঙ্গালীর সেই ঐতিহ্যকে সুদূর কলাম্বাসের বুকে নিয়ে আসার জন্য বিজিত বাবুদের এই প্রয়াসের প্রশংসা করেছেন স্থানীয় অনেকেই। তাঁরা সর্বধর্মনির্বিশেষে ওহাইওর বাঙালীদের আহ্বান জানিয়ে এসেছেন প্রতিবার এবং এই আন্তরিকতায় সাড়া দিয়ে ক্রমশ এই অনুষ্ঠানের জনপ্রিয়তা বেড়েছে। এবছর প্রায় ১০০ জন সমস্ত বয়:গোষ্ঠীর বাঙ্গালী যোগদান করেন। এক সুন্দর সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার সঙ্গে ছিল নানা মুখরোচক খাবারের আনাগোনা যার অধিকাংশই অংশগ্রহণকারী পরিবারগুলি বাড়িতে বানানোর ব্যাবস্থা করেন। মানুষের এই স্বতঃস্ফূর্ত যোগদানে আয়োজক কমিটি অনুষ্ঠানটির আসল সার্থকতা খুঁজে পেয়েছেন।

সম্প্রতি শ্রী তরুণ চ্যাটারজীর আকস্মিক প্রয়ানে স্থানীয় বাঙ্গালীমহলে শোকের ছায়া নেমে আসে। তাঁর অকাল প্রয়াণে তাঁর বিশেষ সতীর্থ শ্রী কৌশিক মজুমদার এক অপূর্ব স্মৃতিচারণের মাধ্যমে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন। শুধু তাই নয় তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়ে অনুষ্ঠানের শুরুতে ২ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এভাবেই বিজয়া সম্মিলনী কলাম্বাসের বাঙালীদের কাছে এক অনন্য মাত্রা পায়। শ্রী অনুপ মজুমদারের প্রবন্ধ, শ্রী কৌশিক মজুমদারের আবৃত্তি, শ্রী অমিয় ঘোষ, শ্রীমতী অরুন্ধতী সরকার, শ্রীমতী মিঠু দে ও কুমারী পরমা ঘোষের একাঙ্ক সঙ্গীত পরিবেশনা, শ্রীমতী সুদেষ্ণা ব্যানারজী, কুমারী স্রিনিকা ব্যানারজী ও শ্রী সুদীপ্ত ব্যানারজীর যৌথ সাংগীতিক উপস্থাপনার সাথেই ছিল শ্রীমতী কাবেরী দত্তের নির্দেশনায় সমবেত নৃত্য। নৃত্যে অংশগ্রহণ করেন শ্রীমতী কাবেরী দত্ত, শ্রীমতী সুনন্দিতা দেব, শ্রীমতী সঞ্চিতা কৃষ্ণা, শ্রীমতী স্বাতী লাহিড়ী, শ্রীমতী শিপ্রা দেবনাথ, শ্রীমতী জয়াশ্রী মণ্ডল, শ্রীমতী কোয়েলী নন্দী ও কুমারী তানিয়া বিশ্বাস।

এইবারের বিজয়া সম্মিলনীর বিশেষ চমক ছিল ম্যাজিক শো! শ্রী শঙ্খনীল সাহা তাঁর যাদু কৌশলে সবাইকে চমৎকৃত করেন। এরপর ছিল ফুচকা প্রতিযোগিতা! জয়ী ও পরাজিত সকলের মুখেই লেগে ছিল তৃপ্তির হাসি! বহু নবাগত বাঙ্গালী পরিবারও এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নিজেদের ওহাইওর বাঙ্গালী সংস্কৃতির সাথে একাত্ম হয়ে ওঠেন। এই আনন্দঘন মিলন অনুষ্ঠানের সুচারু সমাপনের সমস্ত কৃতিত্ব শ্রী ভাদুড়ি সমস্ত অংশগ্রহণকারীদের উদ্দ্যেশেই তুলে দেন। তিনি আশা রাখেন আগামী বছরগুলোতে আপামর বাঙালী একইরকম উৎসাহ ও উদ্দীপনার সাথে যোগদান করে এই উদ্যোগকে আরও সাফল্যমণ্ডিত করে তুলবেন যেখানে নূতন পুরাতনের মেলবন্ধনে বাঙ্গালিয়ানার আমেজ ছড়িয়ে পড়বে গঙ্গা-পদ্মা থেকে শুরু করে ওহাইও নদীর ধারে!