কাকটি উড়ে গেলো আর তালটি পড়ে গেলো – এমন কাকতালীয় নয়; বাংলা সাহিত্যের রয়েছে হাজার বছরের উজ্জ্বল ইতিহাস। গভীর জুগুপ্সা থেকে ছিনিয়ে আনা বিজয় বাঙালির যাপিত জীবনের জল-জোছনা। এখানে লালিত স্বপ্নের ভিতরে ফুটে ওঠে বোধের বীজ, সুপ্ত মননের সংবেদ। এই সংবেদের নিবিড় সম্মিলনীই বাংলা সাহিত্যে মূল স্মারক। এভাবেই বাঙালি তাঁর ব্যক্তিজীবনকেই রূপান্তর করে বিষয়ে; কর্মই তাঁর জীবনের বৈষয়িক রূপান্তর। এমনই এক রূপান্তরের ধারায় বাংলাদেশের সাহিত্য আজ পঞ্চাশে পূর্ণ।
সংস্কৃতি-কথা গ্রন্থে নাম প্রবন্ধে মোতাহের হোসেন চৌধুরী বলছেন- ‘সত্যকে ভালোবাসা, সৌন্দর্য্যকে ভালোবাসা, ভালোবাসাকে ভালোবাসা – বিনা লাভের আশায় ভালোবাসা, নিজের ক্ষতি করে ভালোবাসা – এরি নাম সংস্কৃতি।’ এটাই আসলে বাঙালির যাপিত জীবনের প্রাসঙ্গিক বিষয়, সৃজনশীলতার চর্চায় জীবনকেই আরাধ্য ভেবে বিষয়ে রূপান্তর করা। যা বাঙালির হাজার বছরের জীবনাচার, তাই কার্ল মার্ক্সের কাছে ধরা দিয়েছে শ্রমের ‘অবজেক্টিফিকেশন’ হয়ে; যাই হোক সেটা অবশ্য ভিন্ন আলোচনা।
বাঙালির যাপিত জীবন আর সংস্কৃতি-যাপন মিলে-মিশে একাকার। প্রথিবীর প্রতিটি মানুষ যেমন একক ও অনন্য, তেমনি তাঁর নিজস্ব ভাষা-প্রকাশরীতিও। বাংলা সাহিত্যও আজ স্বাধীনতা ও বিজয়ের অর্ধশতকের উদযাপনের সাথে আপন স্বাতন্ত্র্যে উজ্জ্বল। এখানে সাঁকো হয়ে ডানা মেলে উড়ে যায় সম্পর্কের বালিহাঁস। ফুলেল আবেগে অবলীলায় বেজে ওঠে দূর থেকে ভেসে আসা সুর, জীবনের অপরিহার্য গন্দম। এভাবেই মুগ্ধকথনে রচিত হয় পাতার বিস্তার। এমনি বিস্তারে নিজেকে আড়াল করে বাংলাদেশের লেখাগুলো যেন আপনা-আপনি বাঙালির জীবন ও কর্মের প্রাচুর্যে অর্থমুখর হয়ে বেজে ওঠে, দর্শনের বিস্তারে হয়ে ফুটে ওঠে জীবনের যোজনবিস্তারি গন্ধরাজ।
এই লেখা কোন গবেষণালব্ধ বিশ্লেষণ নয়; বরং স্বাধীনতা ও বিজয়ের অর্ধশতক উদযাপনের প্রাক্কালে বাংলাদেশের সাহিত্যে আলাদা করে শনাক্ত করার মতো কিছু উল্লেখযোগ প্রবণতা নিয়ে যাঁরা বাংলা সাহিত্যকে দিয়েছেন নতুন মাত্রা, যাঁরা প্রতিনিয়ত নিজের লেখায় নিজেকেই অতিক্রম করার দুঃসাহস দেখিয়ে যাচ্ছেন, যাঁরা তথাকথিত তাত্ত্বিক শিল্পবোদ্ধাদের চোখে বুড়া আঙুল দেখিয়ে নিজেদের প্রকাশে সদা বাঙময় – তাঁদেরই সংক্ষিপ্ত উপস্থাপন মাত্র।
সামগ্রিক বিচারে ৫০ বছরে বাংলাদেশের সাহিত্যের যে পরিক্রমা, তার শুরু আরো অনেক আগেই; পঞ্চাশ-ষাটের দশকে। কিন্তু এই লেখার সীমা আমি স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের সাহিত্যে মোটা দাগে নতুন বাঁকের সূচনা করেছেন এমন উল্লেখযোগ্য কয়েকটি নামের মধ্যেই আবদ্ধ রাখতে চাই।
বাঁক বদলের এই পরিক্রমায় নিজস্ব ধারার চিহ্নায়নই এঁদের মূল। এঁরা গতানুগতিকতাকে পাশ কাটিয়ে এগিয়ে যান নিজেদের পথে। এ ছাড়াও হাজার হাজার লেখা প্রকাশিত হচ্ছে প্রতি বছর বাংলাদেশে, অনেকেই বেশ ভালো লিখছেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো, কাদের আলাদা করে চেনা যায় তাঁদের লেখা ও লিখনভঙ্গির মাধ্যমে?
আমি শুধু তাঁদের নামই বলতে চাই এই লেখায়, যাঁদের লেখায় খুঁজে পাওয়া যায় নিজস্ব স্বাক্ষরের ব্যক্তিগত সংবেদ। না হলে নামের তালিকা করেই এমন আরো কয়েকটি লেখা লিখেও শেষ করা যাবে না। স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে নাম ঢেকে দিয়ে শুধু লেখা পাঠ করেই যাঁদের নাম বলে দেয়া যায়, এই লেখা মূলত সেই মুষ্টিমেয় প্রতিভাবান লেখকের মধ্যেই শেষ করে ফেলতে চাই।
পঞ্চাশ বছরের বাংলা সাহিত্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে ছোট কাগজের ক্ষুদ্র প্রয়াসগুলো। অনেকটা ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর মত করেই ছোট কাগজগুলো বরাবরই বাংলা সাহিত্যকে দিয়েছে আত্মপরিচয়ের স্বাতন্ত্র্য। প্রতিষ্ঠান বিরোধিতাকে সম্বল করে ছোট কাগজগুলো লালন করে চলেছে নতুন প্রকাশের দীপ্ত প্রত্যয়। এই উজ্জ্বল প্রচেষ্টার ধারাটি আলাদা একটি সামগ্রিক আলোচনার দাবী রাখে। সঙ্গত কারনে এই সংক্ষিপ্ত বয়ানে ছোট কাগজের বিষয়টি অনুল্লেখই থেকে গেলো।
বাংলা ট্রিবিউনে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশের সাহিত্য: স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর’ প্রবন্ধে মোস্তফা তারিকুল আহসান বলেছেন
‘গণহত্যা, রক্তপাত, লুণ্ঠন, নারীর প্রতি অমানবিক নৃশংসতা, মুক্তিযোদ্ধাদের জীবনপণ লড়াই, অবিরাম জীবনের ক্রন্দন, অবমাননা, ক্রুরতা, ত্যাগ-তিতীক্ষা ও সার্বিকভাবে মহামানাবিক বিপর্যয় উপন্যাসে বিস্তৃতভাবে লক্ষ করা যায়। উল্লেখযোগ্য কয়েকটি উপন্যাসের নাম করা যায় যা স্বাধীনতার অব্যবহিত পরে রচিত। আনোয়ার পাশার ‘রাইফেল রোটি আওরাত’; শওকত ওসমানের ‘জাহান্নাম হতে বিদায়’; রশীদ করীমের ‘আমার যত গ্লানি’; সৈয়দ শামসুল হকের ‘নীল দংশন’, ‘নিষিদ্ধ লোবান’, ‘দ্বিতীয় দিনের কাহিনী’; শওকত আলীর ‘যাত্রা’; রাবেয়া খাতুনের ‘ফেরারি সূর্য’; মকবুলা মনজুরের ‘শিয়রে নিয়ত সূর্য’; মাহমুদুল হকের ‘জীবন আমার বোন’, ‘খেলাঘর’; রশীদ হায়দারের ‘খাঁচায়’, ‘অন্ধকথামালা’; আমজাদ হোসেনের ‘অবেলায় অসময়’; ঝর্ণাদাশ পুরকায়স্থের ‘বন্দী দিন বন্দী রাত্রি’; আহমদ ছফার ‘ওঙ্কার’, ‘অলাতচক্র’, শামসুর রাহমানের ‘অদ্ভুত আঁধার এক’; সুকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের ‘জীবনতরু’; সেলিনা হোসেনের ‘হাঙ্গর নদী গ্রেনেড’; হুমায়ূন আহমেদের ‘আগুনের পরশমনি’; রিজিয়া রহমানের ‘রক্তের অক্ষরে; শহীদুল জহীরের ‘জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা’; মঞ্জু সরকারের ‘প্রতিমা উপাখ্যান’ ইত্যাদি।’
এঁদের বাইরে বাংলা কথা সাহিত্যে যাঁদের আলাদা করে চিহ্নিত করা যায় তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত, পূরবী বসু, কায়েস আহমেদ, সুশান্ত মজুমদার, কাজল শাহনেওয়াজ, আকিমুন রহমান, পাপড়ি রহমান, সাদ কামালী, কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর, মামুন হুসাইন, জাকির তালুকদার, শাহাদুজ্জামান প্রমুখ। আগেই বলেছি আজকাল এঁদের বাইরেও লিখছেন অনেকেই, কিন্ত এঁদের কয়জনকে আমরা আলাদা করে চিহ্নিত করতে পারি; নামে নয়, শুধু লেখার মাধ্যমে?
ঢাকাপোস্ট-এ প্রকাশিত ‘বাংলাদেশের সাহিত্য: পঞ্চাশ পেরিয়ে’ প্রবন্ধে সুমন সাজ্জাদ বলেছেন,
‘বাংলাদেশের সাহিত্যে লৈঙ্গিক রাজনীতি এক গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গ। নব্বইয়ের দশকেই ঘটেছে এর ব্যাপক বিস্তার। রোকেয়া কিংবা সুফিয়া কামালের উদার মানবিকতাবাদী নারী চিন্তার বদলে এলো র্যাডিক্যাল নারীবাদ। ফরহাদ মজহার, হুমায়ুন আজাদ, ফরিদা আখতার, তসলিমা নাসরিন, নাসরীন জাহান, আকিমুন রহমান, শাহনাজ মুন্নীর লেখায় নারীবাদ, নারী-পুরুষের অসমতা ও পুরুষাধিপত্য চমৎকার তাৎপর্যে পরিবেশিত হয়েছে। কারো কারো লেখায় প্রোপাগান্ডা বা প্রচারণা প্রাধান্য পেলেও সামগ্রিকভাবে অভিনব চিন্তা জুগিয়েছে।
নিম্নবর্গের রাজনীতি ও সংস্কৃতির উপস্থাপনা বিশেষ একটি প্রবণতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ সারিতে প্রথমেই উচ্চারিত হতে পারে আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের নাম। সমান্তরালভাবে আলোচনা যোগ্য শওকত আলী, কায়েস আহমদ, সেলিনা হোসেন, মঞ্জু সরকারের প্রসঙ্গ।
ইলিয়াসের দুই চরিত্র হাড্ডি খিজির ও তমিজ নিম্নবর্গের রাজনৈতিক সক্রিয়তার দারুণ নিদর্শন হয়ে আছে। বাংলা উপন্যাসের ইতিহাসে খোয়াবনামা (১৯৯৬) ক্লাসিক উপন্যাস হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে বলেই ধরে নেওয়া যায়। বাঙালির জাতিগত ইতিহাস অনুসন্ধানের সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে শওকত আলীর ‘প্রদোষে প্রাকৃতজন (১৯৮৪)’। নিম্নবর্গের ভাব, চিন্তা ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য ধরতে চেয়েছেন শাহাদুজ্জামান, প্রশান্ত মৃধা, অদিতি ফাল্গুনী।’
একই প্রবন্ধে তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশের পঞ্চাশ বছরের সাহিত্যে হুমায়ূন এক বিরাট বিস্ময়। গল্প বলার অসাধারণ ক্ষমতা তার ছিল। রম্য, রহস্য, কল্পবিজ্ঞান, ইতিহাস, সমকাল তার রচনার বিষয়।’ এর বাইরে বাংলা প্রবন্ধে যাঁদের আলাদা করা যায় তাঁদের চিন্তা ও প্রকাশের নতুনত্বের নন্দন ভাবনায়, তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক, সরদার ফজলুল করিম, সৈয়দ আবুল মকসুদ। বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর, সৈয়দ আকরম হোসেন, আব্দুল মান্নান সৈয়দ, গোলাম মুরশিদ, সলিমুল্লাহ খান, সুমন রহমান, মোহাম্মদ আজম, কুদরত-ই-হুদা প্রমুখ।
বাঙালির কাছে মঞ্চনাটক আর শ্রেণিসংগ্রাম যেন এক হয়ে মিলে যায় তাঁর প্রবাহ ও প্রতিপক্ষতায়। সকল সংগ্রামে মঞ্চনাটক তাই বরাবরই হয়ে উঠেছে আন্দোলনের মূখ্য হাতিয়ার। বাংলাদেশে স্বাধীনতার পঞ্চাশ যখন পালিত হচ্ছে মহা সমারোহে, তখন পিছনে তাকালে দেখা যায় মঞ্চনাটকেই বাঙালি এক হয় বার বার, আবাহনে ও আহ্বানে। মঞ্চনাটকের পরিক্রমায় সময় ও জীবনের এই যে পথ ও মতের সাঁকো, নির্মিতির যে নিমগ্ন নিবেদন সেখানে নাটকে উজ্জ্বল তারকার আসন গ্রহণ করে আছেন আব্দুল্লাহ আল মামুন, মমতাজউদ্দিন আহমদ, মামুনুর রশীদ, সেলিম আল দীন, এস. এম. সোলায়মান, মান্নান হীরা, আব্দুল্লাহেল মাহমুদ প্রমুখ। সবচেয় বেশি দেশজ ঘরানার নতুনত্বের প্রকাশ দেখি সেলিম আল দীন-এর নাটকে। আর ইউরোপীয় ঘরানা বোধ ও বোধির বিস্তারকে বাঙালি ঘরানায় মিশিয়ে দিয়েছেন সাঈদ আহমদ। আবার বাঙলাদেশে আধুনিক নাট্যঘরানা তৈরি করার ক্ষেত্রে জিয়া হায়দারও উল্লাখযোগ্য। এর পর বলা যায় মাসুম রেজার নাম। বর্তমানে বাংলাদেশের মঞ্চনাটকে মৌলিক অবদানের জন্য বেশ আলচিত একটি নাম বদরুজ্জামান আলমগীর। এঁদের বাইরেও আরো যাঁদের আলাদা করে চিহ্নিত করা যায় তাঁরা হলেন রুমা মোদক, শুভাশিস সিনহা, সাধনা আহমেদ প্রমুখ।
স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলা সাহিত্য বার বার বদল করেছে বাঁক। নানাবিধ বন্টন ও বক্ররেখার আঁচড় সাহিত্যের ধারাকে করেছে রক্তাক্ত; কখনো বা দিয়েছে নতুন প্রকাশের দূতন্ত সাহস। এখানে সবচেয়ে ধারালো এবং নতুন পথ ও মতের ধারায় বার বার উজ্জ্বলতা বদলে নতুন রূপে ধরা দিয়েছে বাংলা কবিতা। আমরা জানি স্বাধীনতা পরবর্তী কবিদের মধ্যে সম্পূর্ণ নতুন আলোকে নিজেকে সবার সমানে প্রকাশ করেছিলেন ক্ষণজন্মা আবুল হাসান। তাঁর সময়ে এবং পরবর্তীতে বাংলা কবিতায় যাঁদের আমরা নতুন স্বরে চিহ্নিত করতে পারি তাঁরা হলেন সিকদার আমিনুল হক, সাইয়িদ আতীকুল্লাহ, মোহাম্মদ রফিক, আবিদ আজাদ, কাজল শাহনেওয়াজ, নাসিমা সুলতানা। তবে এঁদের মধ্যে বাংলা কবিতার যে ধারাবাহিকতা, তা যেন মাসুদ খানে এসে পায় আরো এক নতুন ধারা। কবিতায় বোধ ও বোধি, ভাষা ও চিত্রকল্পের ভারসাম্যে তিনি নিয়ে এলেন সম্পূর্ণ নতুন এক প্রকাশ। এ ধারায় আর যাঁদের আলাদা করে চিহ্নিত করা যায় তাঁরা হলেন ফেরদৌস নাহার, ওমর শামস, কামরুজ্জামান কামু, মিজান খন্দকার, বদরুজ্জামান আলমগীর, সুব্রত অগাস্টিন গোমেজ, মজনু শাহ, মুজিব ইরম, শামীম কবির, জহির হাসান, শিমুল মাহমুদ, হাসান রোবায়েত এবং রুম্মানা জান্নাত প্রমুখ। তবে একটি কথা বলতে দ্বিধা নাই যে, এঁদের অনেকেই আবার একটি নির্দিষ্ট আবর্তে ঘুরে বেড়ান। নিজেকে অতিক্রম করে বার বার বাঁধ ভেঙে এগিয়ে যাওয়ার প্রবণতা অনেকের মধ্যেই নেই। তবে আধুনিক জীবন জিজ্ঞাসার সঙ্গে মন ও মননের যোগসাধনে এক নতুন চিত্রকল্প ও ভাষাভঙ্গিমা অন্বেষণে নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন মাসুদ খান ও বদরুজ্জামান আলমগীর। এঁরা একটি থেকে আরেকটি লেখায় বরাবরই নিজেকে ছাড়িয়ে যান। এই ধারার লেখকগণ এভাবে নিজেকেই দাঁড় করিয়ে দেন নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী ও প্রতিপক্ষ হিসাবে।
ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের বাংলাদেশ নানা বর্ণ ও ধর্মের একটি দেশ। অসাম্প্রদায়িক চেতনাই বাংলাদেশের একমাত্র পরিচয়। আদর্শিক দ্বন্দ্বের দ্বিধা ঝেড়ে ফেলে বাংলার সাথে বাংলাদেশে বসবাসকারী সকল ক্ষুদ্র ও নৃগোষ্ঠীর ভাষা ও সাহিত্যও একদিন হয়ে উঠবে বাঙালির আত্মপরিচয়ের দ্বীপ-শিখা। পঞ্চাশ পেরিয়ে বাংলা সাহিত্য একদিন বাঙালির সাথে সাথে হয়ে উঠবে বৈশ্বিক মন ও মননের সমীকৃত সংবেদ; বিহবল বিশ্বাসের বিস্মিত বয়ান।
আপনার মতামত লিখুন :