নিউইয়র্কে নাটক ‘হাছন জানের রাজা’ মঞ্চায়িত


ওহাইও সংবাদ প্রকাশের সময় : অক্টোবর ৩, ২০২৩, ৮:৪০ অপরাহ্ণ /
নিউইয়র্কে নাটক ‘হাছন জানের রাজা’ মঞ্চায়িত

বিনোদন ডেস্ক : প্রায় দুশো মেইল পথ পারি দিয়ে, ওয়াশিংটন ডি সি মেট্রোপলিটনের লোকজ-সংস্কৃতিক দল, ‘একতারা’ মাতিয়ে গেল নিউইয়র্ক। গত ১ অক্টোবর (রবিবার) জ্যামাইকা পারফর্মিং আর্ট সেন্টারের মঞ্চে, তারা পরিবেশন করে, স্বনামধন্য নাট্যকার, শাকুর মজিদের, অন্ত-মিলে বাঁধা, গীতল নাটক ‘হাছন জানের রাজা’। মঞ্চায়নের আগের দিন প্রায় ৭০ জনের এই দল নিউইয়র্ক, টাইম স্কোয়ার, জেক্শন হাইটিস এলাকায় ‘হাছন জানের রাজা’ লেখা, একই রকম টি-শার্ট পরে, গান-বাজনা-ঘোরাঘুরি করে প্রথমেই চারদিকে শোরগোল ফেলে দেয়। আর নাটকের দিন তাই দর্শক সমাগমও ছিল প্রচুর। দু’ঘন্টার কিছু কম সময়ের এই নাটক, মন্ত্রমুগ্ধের মত উপভোগ করে দর্শক-শ্রোতা। পিন পতন নীরবতা আর একএকটি দৃশ্য শেষে করতালিতে মুখর ছিল পুরোটা সময়।


গত ৩ জুন (শনিবার) নাটক’টি প্রথম মঞ্চায়ন হয় উত্তর ভার্জেনিয়াতে। তা দেখে মুগ্ধ হয়ে, মূলত খাইরুল আমিন ভূঁইয়া পবন সাথে তাঁর কিছু বন্ধু সহচর, গীতল নাটকটি নিয়ে যায় নিউইয়র্কে এবং শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রয়োজনীয় সকল দায়িত্ব সম্পন্ন করেন। প্রধান অতিথির আসন অলংকৃত করেন জনাব গিয়াস আহমেদ। বিশেষ ব্যক্তিত্বদের মধ্যে ছিলেন, রথীন্দ্রনাথ রায়, খাইরুল ইসলাম পাখি, লুৎফুন্নাহার লতা, বেবি নাজনীন, সেলিম চৌধুরী, অ্যানি ফেরদৌস (বিপা), মহিতোষ তালুকদার তাপস, এটর্নি মইন সহ আরো অনেকে।


হাছন রাজার তরুণ জীবনের অজানা রহস্যময়তার, ভেদ ভাঙ্গার গল্প এই ‘হাছন জানের রাজা’। নাট্যকার যা এঁকেছেন, তার গবেষণা লব্ধজ্ঞান এবং কল্পনার রঙে। এ নাটকে ৮/১০ টি হাছন রাজার গান ছিল। নাচ এবং অভিনয়ের সাথে এই গানগুলো, লোকজ বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গতে, লাইফ পরিবেশন করা হয়, ব্যবহার করা হয়নি কোন রেকর্ডিং। দৃশ্য থেকে দৃশ্যান্তর ছিল নির্বিঘ্ন-মসৃন। সংলাপ এবং শিল্পীদের সংলাপক্ষেপন, অভিনয়, এক্সপ্রেশন, দর্শককে ঘটনার গভীরে নিয়ে যায়। প্রতিটি গানই, নাচ আর অভিনয়ের সাথে চমৎকার গায়কীতে উপস্থাপন করা হয়। বাঁশি, হারমোনিয়াম, তালযন্ত্রের সুরেলা মেলবন্ধনে, যেন মঞ্চে জীবন্ত হয়ে ওঠেন হাছন রাজা। ছিল অসাধারণ, সিঙ্ক্রোনাইজিড কোরিওগ্রাফি।

‘হাছন জানের রাজা’র মঞ্চসজ্জায় পরিকল্পনার ছাপ ছিল সুসস্পষ্ট, যাকে আরো আকর্ষণীয় করে তোলে অধুনা ডিজিটাল প্রযুক্তি। আলোক এবং শব্দ নিয়ন্ত্রণের প্রশংসা না করলেই নয়। এতগুলো মাইক্রোফোন আর এই ভিন্ন ধর্মী পরিবেশনার আলোর খেলা খুব দক্ষ হাত ছাড়া সম্ভব নয়। মঞ্চ এবং মঞ্চের বাইরের সকল দলীয় কর্ম এক সূতোয় বাঁধা ছিল। তাই এই গীতল নাটক দর্শক-শ্রোতার মনে বহুদিন অম্লান থাকবে।